লেটেস্ট

Post Top Ad

Your Ad Spot

Thursday, June 11, 2020

রাস্তায় দুর্ঘটনা এড়াতে

আমি যে জিনিষটি খুব ভয় পাই সেটি হচ্ছে এক্সিডেন্ট । এই এক্সিডেন্ট এড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি যে জিনিষটি প্রয়োজন তা হচ্ছে কনফিডেন্স । আপনি কিভাবে আপনার প্রিয় সাইকেলটি চালাবেন, সেটি যখন আপনি নিশ্চিত হয়ে যাবেন তখন এক্সিডেন্ট এর সম্ভাবনা কমে যাবে । গ্রুপে এসব নিয়ে অনেক কথা হয়, তবুও কথাগুলো বলছি, কারণ রিসেন্টলি অনেক এক্সিডেন্ট আমি হতে দেখেছি, যেখানে সাইকেল, রাইডার দুজনেই গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন ।

>চেক ইউর বাইকঃ সাইকেল নিয়ে গ্যারেজ থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই প্রথমে চেক করুন ব্রেক আর চাকার হাওয়া ঠিক আছে কি না । কয়েক মিটার চালালেই আপনি অসংগতি ধরতে পারবেন । বুঝেনই তো সাইকেলের ব্রেকফেল হলে জীবনেরও ব্রেকফেল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। 


>ওভারটেকিং টেন্ডেন্সিঃ রাস্তাঘাটে চলতে গেলে ওভারটেইক করতেই হয় । কিন্তু ওভারটেইক করার আগে উঁকি মেরে নিশ্চিত হয়ে নিন সামনে থেকে কোনো গাড়ি আসছে কি না কিংবা পিছন থেকে । রিস্কি ওভারটেকের কারণে অনেক এক্সিডেন্ট হয় । ছোট একটা গ্যাপ হয়তো আছে, সেখান দিয়ে চলেও যাওয়া যাবে, কিন্তু কেন? একদম হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিউর হলে তবেই যান, কিসের এতো তাড়া? ডানদিক দিয়ে ওভারটেক করুন, বামদিকে ওভারটেক করা বিপজ্জনক । বিশেষ করে বড় গাড়ি যেমনঃ বাস ট্রাক ইত্যাদির ড্রাইভিং সিট থেকে বামপাশের ছোট যানের অবস্থান টের পাওয়া যায় না, বাঁয়ে চাপিয়ে দিলেই শেষ । 


>স্পীডব্রেকারঃ স্পীডব্রেকারে যথাসম্ভব গতি কমান, দুইটা হাতই হ্যান্ডেলবারে রাখুন । এমন অনেকসময় হয় যে দূর থেকে স্পীডব্রেকার দেখা যায় না, হঠাৎই সামনে এসে পড়ে, তখন সাথে সাথে হার্ডব্রেক ভুলেও করবেন না, আপনার রাইডটিকে নিজস্ব গতিতে যেতে দিন, হ্যান্ডেলবার শক্ত করে ধরে থাকুন । প্যাডেল দুটো মাঝামাঝি অবস্থায় নিয়ে আসুন যাতে স্পীড ব্রেকারের সাথে না লাগে ।
>বেল বাজানঃ আমাদের দেশের মানুষ বেল বাজানোকে তোয়াক্কা করে না । তবুও বাজান । এমনকি গাড়ি বা মানুষের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ও বেল বাজিয়ে যান । অনেক সময় কথা বলতে বলতে মানুষ হঠাৎই রাস্তার মাঝখানে চলে আসে ।


>সিগন্যাল দিনঃ বড় রাস্তায় পিছনে গাড়ি থাকলে হাত দিয়ে সিগন্যাল দিয়ে ক্রস করুন । রিস্ক নিয়ে রাস্তা ক্রস করবেন না, প্রয়োজনে থামুন । ইগোর কারণে অনেকেই দেখেছি স্যাডল থেকে নামে না । আমি কনফিডেন্ট রাইডার, তাও এসব ক্ষেত্রে রিস্ক নেই না । প্রয়োজনে স্যাডল থেকে নেমে সব গাড়ি যাওয়ার পর রাস্তা ক্রস করি। 


>ব্লিংকারঃ রাতের বেলা অবশ্যই ব্লিংকার ব্যবহার করুন, রাস্তায় লাইট না থাকলে হেডলাইট ব্যবহার করুন ।


>স্টপ স্পীডিংঃ ট্রাফিকের মাঝে স্পীডিং করবেন না । ট্রেইনিং এর সময় স্পীডিং করুন ঠিক আছে, কিন্তু কমিউট এর সময় অপ্রয়োজনীয় স্পীডিং করবেন না ।


>স্টপ রেসিং এন্ড স্টান্টঃ ট্রাফিকের মধ্যে অন্য সাইকেল বা গাড়ির সাথে রেস করবেন না । অহেতুক হুইলি, স্টপি বা অন্য কোনো স্টান্ট করবেন না । এতে বিপদ হতে পারে ।

 
>ক্ষয়ে যাওয়া টায়ার চেঞ্জ করুনঃ টায়ারের কন্ডিশন খারাপ হয়ে গেলে, আজ বদলাবো কাল বদলাবো করবেন না । দ্রুত চেঞ্জ করুন । নাহলে এক্সিডেন্ট হতে পারে ।


>চাকার বাতাসঃ বৃষ্টির দিনে রাস্তায় পানি ও কাদা থাকে । চাকার হাওয়া একটু কমিয়ে চালালে গ্রিপ পাওয়া যাবে বেশি, চাকা স্কিড করে এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে । 


>অন্য চালকদের সম্মান দিনঃ বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ি কিংবা অন্য যান কিংবা রাস্তার অন্যান্য যানকে সম্মান দিন । সম্মান মানে সালাম দিতে হবে তা না প্রয়োজন মোতাবেক সাইড দিন, গতি কমান, মাথা নেড়ে সিগন্যাল দিন। 


>বালি ও পাথর থেকে সাবধানঃ গতকালই এক মোটরবাইকার ভাই ছোট স্পীডিং করার সময় ছোট একটা পাথরে ইমব্যালেন্সড হয়ে ক্র্যাশ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে । কী দরকার? বাংলাদেশের রাস্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই, ছোট্ট একটি পাথর বা বালি আপনার প্রাণহানির কারণ হতে পারে। 


>টার্ন স্লোলিঃ মোড় ঘোরার সময় গতি কমান, বেল বাজান । যেদিকে টার্ন করছেন সেদিকের প্যাডেল আপ পজিশনে রাখুন নাহয় রাস্তার সাথে লেগে পড়ে যেতে পারেন । 


>কিপ ইউর হেড আপঃ প্রধান রাস্তায় চালানোর সময় হেড ডাউন করে রাখবেন না, অন্য কিছু নিয়ে ভাববেন না । প্রচণ্ড মন খারাপ নিয়ে বা অন্যমনস্ক হয়ে রাইড করবেন না । 


>মেইক শিউর ইউ আর ফিটঃ আনফিট অবস্থায় সাইকেল চালাবেন না, হাইপ্রেশার/লোপ্রেশার নিয়ে সাইকেল চালানো খুবই বিপজ্জনক । শরীরে জ্বর থাকলে মাথা ঘোরাতে পারে, এমন অবস্থায় সাইকেল না চালানোই উচিৎ । 


>রাস্তায় শিশুদের দেখলে গতি কমানঃ শিশুদের মুভমেন্ট আপনি কখনোই বুঝতে পারবেন না । তাই দূর থেকে দেখলেই গতি কমিয়ে পার করে যাওয়ার চেষ্টা করুন ।


>এভয়েড টেকিং রঙ সাইডঃ জ্যাম এড়াতে রঙ সাইডে ঢুকবেন না, এতে আপনার সাথে সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য যানবাহনগুলোও ঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে পড়বে ।


>সেফটি গিয়ার্স পরুনঃ সবসময় সেইফটি গিয়ার্স মেইনটেইন করুন ।


আমি আমার সর্বশেষ এক্সিডেন্টটি করেছিলাম প্রায় ৮/১০ বছর আগে, এক্সিডেন্ট বলতে বালিতে স্কিড করে পড়ে গেছিলাম, কনুই ছুলে গেছিলো । আল্লাহ্‌র রহমতে এর পরে আর কখনো দুর্ঘটনা ঘটে নি । রাস্তায় চলার পথে অনেক সতর্ক থাকি, তাও দুর্ঘটনা যেকোনো সময় ঘটতে পারে । আমরা চেষ্টা করবো দুর্ঘটনা এড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে । হ্যাপি সাইক্লিং, সবাই ভালো থাকুন।

©রাতুল রাহা

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot