লেটেস্ট

Post Top Ad

Your Ad Spot

Wednesday, June 17, 2020

সাইকেল দিয়ে ঘুরে আসা ঢাকার আশেপাশের কিছু প্লেসের লোকেশন, ডিস্টেন্স ও রুট ম্যাপের তালিকা

এমনিতে ঢাকায় সাইক্লিস্ট এর সংখ্যা নেহাতই কম নয়, করোনা প্যাণ্ডেমিক এর আগে আমরা বেশিরভাগ সাইক্লিস্টরাই রিক্রিয়েশনাল এক্টিভিটির উদ্দেশ্যে সাইকেল নিয়ে বের হতাম। করোনাকালিন সময়ে রেগুলার রাইডে ওয়ার্কপ্লেসে যাতায়াতের জন্য মানুষ এই দিচক্রযান বেছে নিচ্ছেন দেখে ভালো লাগছে, হয়তো এটা অনেকের অভ্যাসেও পরিণত হয়ে যাবে :)
.
রেগুলার বাসা-ওয়ার্কপ্লেস-বাসা তে রাইড দেয়াটা একঘেয়ে হয়ে যেতে পারে, এ জন্য একটু এদিকওদিক ঘুরে আসাটাও জরুরি। এই পোস্টে গত ৪-৫ বছরে সাইকেল দিয়ে ঘুরে আসা ঢাকার আশেপাশের কিছু প্লেসের লোকেশন, ডিস্টেন্স আর রুট ম্যাপ এর লিংক দিয়ে দেবো, যাতে আপনারাও রাইড দিয়ে আসতে পারেন। [বিঃদ্রঃ পোস্টে শুধুমাত্র মানিকমিয়া এভিনিউ(বাইক ফ্রাইডে রাইডের স্টার্টিং পয়েন্ট) থেকে ঢাকার একটু বাইরের ডেস্টিনেশনে ''যাওয়া এবং আসার'' মোট দূরত্ব কাউন্ট করা হয়েছে, সাথে আশেপাশের ছোট ছোট রোড, লিংক রোড, গলিঘুপচি ইগ্নোর করা হয়েছে। প্রতি ডেস্টিনেশনের আশেপাশের প্লেস গুলোর বর্ণনা ডেস্ক্রিপশনে কিছুটা দেয়া থাকবে]

১/ চন্দ্রিমা মডেল টাউন(মোহাম্মদপুর) : ১২ কিমি : বুড়িগঙ্গার পাড়ে অবস্থিত এই প্লেসের মূল আকর্ষণ রিভারসাইড কিছু রেস্টুরেন্ট, তাছাড়া বিকেলে নদীর পাড়ে বসে এক কাপ চা আর অপর পাড়ের ইটভাটা, চলমান ট্রলার দেখে সুন্দর একটা সময় কাটাতে পারবেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
২/ দুদু মার্কেট(বসিলা) : ১৮ কিমি : মানিক মিয়া এভিনিউ হতে সবচেয়ে কাছের একটি প্লেস যা খ্যাতি পেয়েছে বাজারের সেরা মুড়ি মাখার জন্য। বিকেল বেলা রাইড করে আশেপাশের মধুসিটি, ইটভাটা, বুড়িগঙ্গার তীর ঘুরে আসতে পারবেন সন্ধ্যার মধ্যেই। তাছাড়া বসিলা ব্রীজের ঠিক নিচে সিএলসি পাওয়ার কোম্পানির ঢালাই দেয়া বাধ এ বসে বিকেলটাও কাটিয়ে আসতে পারেন।  ম্যাপ লিংকঃ
.
৪/ নির্ঝর(ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট) : ১৮ কিমি : রেসিডেনসিয়াল এরিয়ার লেক এর পাড়ে বসে সুন্দর সময় কাটবে। ম্যাপ লিংকঃ
.
৫/ বৃন্দাবন(মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট) : ২০ কিমি : ম্যাপ লিংকঃ
.
৬/ গ্রীন মডেল টাউন(মুগদা) : ২২ কিমি : নামের সাথে মিল রয়েছে পরিবেশেও গাছগাছালি পরিপূর্ন এই প্লেস টা সতেজ একটা অনূভুতি দিতে পারে, বিকেল টাইমে এটা পাবলিক গেট টুগেদার প্লেসে পূর্ন হয়ে যায়, অন্যান্য টাইমে শান্তশিষ্টই বলা যায়। ম্যাপ লিংকঃ
.
৭/ আফতাবনগর : ২৪ কিমি : হাতিরঝিলের পাশ দিয়ে রাইড করে এই প্লেসে গিয়ে মূল আকর্ষণ দেখবেন এর লেক টি। চাইলে লেকে ঝাপাঝাপি করেও আসতে পারেন। তাছাড়া একটু ভেতরে দাসেরকান্দি সিউয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, ছোট ছোট রোড ঘুরে ত্রিমোহিনী বাশের ব্রিজও ঘুরে আসতে পারেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
৮/ বুড়িগঙ্গা রিভারসাইড ফুটপাত: ২৮ কিমি : যাত্রাবাড়ি, জুরাইন, শ্যামপুর দিয়ে বুড়িগঙ্গা ইকোপার্ক গেটে যেতে হয়, তবে আসল আকর্ষণ মোটেও ইকোপার্ক নয়। ইকো পার্কের গেটের পাশ দিয়ে সরু গলি দিয়ে এগোলেই পেয়ে যাবেন বুড়িগঙ্গার ওপরে তৈরি হাটার এ ব্রিজ টি! শ্যামপুর থেকে শুরু করে একেবারে ফতুল্লা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলো চলে গেছে এই হাঁটার ব্রিজটি, সকাল টাইমে ব্রিজে তেমন ভীড় থাকে না, তাই সাইক্লিং এর জন্য উত্তম, বিকেলে মানুষ ভীড় জমায়। ম্যাপ লিংকঃ
.
৯/ সোহানা হোটেল(ইনসার আলী, রোহিতপুর) : ৩০ কিমি : ৭-৮ পদের ভর্তা, গরম গরম ডিম ভাজি আর খুদের খিচুরির জন্য বিখ্যাত এই হোটেল বিগিনার সাইক্লিস্ট এর জন্য স্বর্গই বলা যায়। তাছাড়া যাওয়ার রুট টাও অনেক সুন্দর, আশেপাশের ছোট রোড গুলোও যথেষ্ট সুন্দর, বছিলা খোলামোড়া হয়ে মেইন রোডে উঠে পাশেই Magic Island পার্ক রয়েছে, ঘুরে আসতে পারেন। রোহিতপুর বাজারে গরুর দুধের চা খেয়ে আসতে ভুলবেন না যেন। ম্যাপ লিংকঃ 
.
১০/ বাউনিয়া(উত্তরা) : ৩০ কিমি : খুব কাছে থেকে উড়োজাহাজ ল্যান্ডিং এর সাথে সেলফি কেইবা না তুলতে চাইবে, এই ইচ্ছা পূরনের জন্যই বাউনিয়ায় আমরা সাইক্লিস্টরা ভীড় করি। ম্যাপ লিংকঃ
.
১১/ আমুলিয়া মডেল টাউন(ডেমরা) : ৩২ কিমি : হাতিরঝিল ঘুরে রামপুরা-বনশ্রী-ডেমরা লিংক রোড দিয়ে আসতে হবে এই কাশফুলের রাজ্যে! কিংবা সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ি দিয়েও যাওয়া যায়। শরৎকালে আসাটাই বেটার, তাছাড়া দূর থেকে ঢাকার উচু সব বিল্ডিং গুলো দেখতে খারাপ লাগবে না। ম্যাপ লিংকঃ
.
১২/ বেরাইদ : ৩২ কিমি : বনানী-গুলশান- নতুনবাজার হয়ে বালু নদীর তীর ঘুরে আসা যায়, তাছাড়া ছোট রোড গুলোও অনেক সুন্দর। নদীর বুকে গড়ে তোলা রেস্টুরেন্টগুলোর কারণে অনেকে এই প্লেসটাকে গরীবের মালদ্বীপ ও বলে থাকেন! ফর্টিস স্পোর্টস ক্লাবের আর্টিফিসিয়াল ফিল্ডও দেখে আসবেন অবশ্যই! ম্যাপ লিংকঃ
.
১৩/ সারিঘাট : ৩৮ কিমি : বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পের পেছনে অবস্থিত এই ছোট্ট এরিয়াতে এসে নৌকা চালানো, কায়াকিং এর অভিজ্ঞতা নিতে পারেন, অবশ্য বর্ষা ঋতু ছাড়া বাকি সময়ে এত জৌলুস থাকে না এই প্লেসের। ম্যাপ লিংকঃ
.
১৪/ ঢালিকান্দি, কলাতিয়া : ৩৪ কিমি : কালিগঙ্গা নদী আর ধলেশ্বরী নদীর মিলনস্থল, অনেকটা তিনটি ছোট নদীর মোহনার মত, পাড়ে বসে নির্মল বাতাস উপভোগ করতে ভালো লাগবে। ম্যাপ লিংকঃ
.
১৫/ নীলা মার্কেট, পূর্বাচল : ৩৪ কিমি : মার্কেট নিয়ে বলার কিছু নেই। মার্কেটের বিপরীত এলাকায় পার্শ্ববর্তী এরিয়া কৃত্রিম দ্বীপ/পূর্বাচল ইকো পার্ক ঘুরে আসবেন, তুরাগ নদীর তীর ঘেষে ভাটারিয়া, বর্দি বাজারের ভাজাপোড়া খাবার খেয়ে আসবেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
১৬/ ধলেশ্বরী পাড়, রোহিতপুর : ৩৫ কিমি : ইনসারি আলি হোটেলে যে রুটে, ঠিক সেই রুট ধরেই এগোলে ছোট্ট বিসিক এরিয়া পাবেন, এছাড়া কলাতিয়া দিয়েই ঘোরা পথে আসা যায়। ধলেশ্বরীর পাশে বিসিক খেয়া ঘাটে বসে জিরিয়ে নিতে পারবেন। এছাড়া রোড ধরে এগিয়ে নদীর উপরে তুলশীখালি ব্রিজে দাড়িয়ে নির্মল বাতাস উপভোগ করে আসতে পারেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
১৭/ ইছাপুরা বাজার : ৩৬ কিমি : বেরাইদ বাজার হতে ট্রলারে করে বালু নদী পেরিয়ে বা নীলা মার্কেট থেকে বাই রোডে ইছাপুরা বাজার আসতে পারবেন। লোকাল এরিয়ার হাতে বানানো মিষ্টি, মুড়ি মাখা খেয়ে যেতে ভুলবেন না যেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
১৮/ সাপের বাজার(বিবির বাজার, কোন্ডা) : ৪০ কিমি : সারিঘাট রুট ধরে সামনে এগোলেই এই মফস্বল এরিয়া, রোডের পাশে সারি সারি শিপ বিল্ডিং ইয়ার্ড ঘুরে দেখতে পারবেন। ফেরার পথে মোল্লার হাট, কুণ্ডার চরের রোড গুলোতে রাইডে সুন্দর সময় কাটবে। ম্যাপ লিংকঃ
.
১৯/ দিয়াবাড়ি (উত্তরা) : ৪০ কিমি : ম্যাপ লিংকঃ
.
২০/ সাউথ টাউন রেসিডেনশিয়াল এরিয়া : ৪০ কিমি : ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসে হাইওয়ে ধরে এক্সপ্রেস গতিতে চলে যেতে পারেন ছোট্ট এই এরিয়ায়। মূল আকর্ষণ খুব সুন্দর সাউথ টাউন জামে মসজিদ, আর্কিটেকচারের দিক দিয়ে খুবই আকর্ষণীয়! ফেরার পথে ঝিলমিল প্রজেক্টে কিছু সময়ে কাটিয়ে আসতে পারেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
২১/ সিদ্ধিরগঞ্জ রিভারভিউ : ৪২ কিমি : কাচপুর ব্রিজের ডানে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেষে তৈরি করি ছোট্ট ওভারপাস টাইপের এই ব্রিজ টি তে কিছু সময় কাটিয়ে আসতে পারেন, এটা অনেকটা বুড়িগঙ্গা ওভারপাসের মতই। ম্যাপ লিংকঃ
.
২২/ সাদুল্যাপুর(গোলাপ গ্রাম) : ৪৪ কিমি : সাইক্লিস্টদের একটি পছন্দের স্থান এটি, মিরপুর ১ দিয়াবাড়ি ঘাট, তুরাগ নদীর পাশ দিয়ে বিরুলিয়া, আক্রান বাজার ঘুরে পুরো পথ সাইকেল দিয়েই যেতে পারবেন। অথবা দিয়াবাড়ি ঘাট থেকে ট্রলারে সাইকেল তুলেও যেতে পারবেন। গ্রামে গিয়ে একরের পর একর জমি গোলাপ ফুল দেখে চোখ জূড়াতে বাধ্য। ম্যাপ লিংকঃ
.
২৩/ দক্ষিণপাড়া(ডেমরা) : ৪৪ কিমি : যাত্রাবাড়ি ডেমরা রোডে এসে স্টাফকোয়ার্টার দিতে চনপাড়ায় আসবেন, চনপাড়া বাজার থেকে মানে পশ্চিমগাও দিয়ে দক্ষিণ পাড়া যাওয়া যায়, এছাড়া, বনশ্রী আফতাব নগর দিয়ে এসেও কায়েতপাড়া দিয়ে আসতে পারবেন! কিছুটা গ্রাম্য এলাকা আর ক্লিন মাখন পিচঢালা পথ সুন্দর একটা রাইডের অভিজ্ঞতা দিবে, সাথে অপর পাশের ঠুলঠুলিয়া গ্রামও ঘুরে যেতে পারেন একই সাথে। ম্যাপ লিংকঃ
.
২৪/ বাওথার(উত্তরখান) : ৪৪ কিমি : ভরা বর্ষাকালে তুরাগ নদীর তীরের এই স্থান টি গাছগাছালি আর পানির সমন্বয়ে যে অপরুপ সৌন্দর্য ধারণ করে সেটা ঢাকার আর অন্য কোনো প্লেসে মনে হয় দেখা যাবে না! ম্যাপ লিংকঃ 
.
২৫/ তেরমুখ : ৫০ কিমি : আব্দুল্লাহপুর থেকে ডানের রোড ধরে যেতে হয়। দুটি ব্রীজে নদীর ৫ টি সংযোগস্থল দেখা যায়। তাছাড়া বর্ষাকালে বাওথার থেকে ট্রলারে করেও তেরমুখ যেতে পারবেন। আশেপাশের ছোট রোডগুলো দিয়ে 'কেতুন' এরিয়ার কিছু এগ্রো ফার্মের বিশাল লেক, লেকের ঠিক মাঝে তৈরি আরেকটি আকর্ষণীয় রেস্টুরেন্টও ঘুরে আসতে পারেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
২৬/ বাংলার তাজমহল : ৫০ কিমি : আহামরি কিছু নয়, তবে খারাপও বলা যায় না! পাশেই বাংলার পিরামিড নামের একটা স্থাপনা রয়েছে। যাওয়া আসার রাইডে রুপগঞ্জ ঘুরেও আসতে পারবেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
২৭/ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : ৫২ কিমি : জাহাঙ্গীরনগর নিয়ে লিখে শেষ করা যাবে না। শুধু বলবো বোটানিক্যাল গার্ডেন, জেইউ মনপুরা, জেইউ সুন্দরবন ভালো করে ঘুরে আসবেন, সাথে জাহাঙ্গীরনগরের পেছনে ধলেশ্বরীর কোল ঘেষে ওঠা গ্রাম্য রাস্তাগুলোও অসাধারণ এক্সপেরিয়েন্স দেবে। ম্যাপ লিংকঃ
.
২৮/ সেক্টর ২১, পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্প : ৫২ কিমি : মূল আকর্ষণ একটি উন্মুক্ত লেক! চারদিকে বালু এবং মাঝে লেকের টলটলে পানি দেখে সেইন্টমার্টিনের কথা হয়তো মনে পড়বে! অবশ্যই মানুষ অলরেডি এই লেককে 'গরীবের সেইন্টমার্টিন' হিসেবে ট্যাগ লাগিয়েই দিয়েছে। ম্যাপ লিংকঃ
.
২৯/ ডিক্রির চর : ৫২ কিমি : স্পেশাল কিছু নয়, তবে চারদিকে ইটাভাটা এবং কর্মীদের ইট তৈরির কাজকর্ম ভালো লাগতে পারে! সিপাহি পাড়ায় তিন নদীর মোহনা বসে কিছু ভালো সময় কাটবে। ম্যাপ লিংকঃ
.
৩০/ জিন্দা পার্ক : ৫৬ কিমি : শান্তশিষ্ট একটি প্লেস, লেকের পাড়ে বসে,সবুজ মাঠে শুয়ে আরামে সময় কাটিয়ে আসতে পারবেন। সেই সাথে একটু পাশেই সিজনাল শাপলা ফুলের বিল রয়েছে, শীতের সকালে বিল ভরা শাপলা দেখতে পারবেন। ২ কিলো সয়ামনে মাটির ঘর নামের একটা ইন্টারেস্টিং একটা রেস্টুরেন্ট রয়েছে। ঘুরে আসতে পারেন। অবশ্য তেরমুখ দিয়েও এই প্লেসে আসা যায়। ম্যাপ লিংকঃ
.
৩১/ সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জ : ৫৬ কিমি : এক্স্যাক্ট কোনো লোকেশন নয়। শীতকালে সরু রাস্তার দু ধারে সারি সারি সরিষা ক্ষেতের মাঝ দিয়ে রাইড করে আসাটা অসাধারণ একটা এক্সপেরিয়েন্স। তাছাড়া কলাতিয়া, হযরতপুর দিয়েও ঘুরে আসা যায়। ম্যাপ লিংকঃ 
.
৩২/ সাবদি : ৫৮ কিমি : গোলাপ গ্রামের নাম সবাই জানলেও "ফুলের গ্রাম" খ্যাত এই এলাকাটা খুব কম মানুষই জানে। বছরের নির্দিষ্ট একটা সময়ে (ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল) এই এলাকায় বসে ফুলের মেলা! গোলাপ, গাঁদা, টিউলিপ, গ্ল্যাডিওলাস সহ নাম না জানা আরো অনেক ফুলের চাষ হয় শীতে। ফেরার পথে নারায়নগঞ্জের সোনাকান্দা দূর্গ,বোস কেবিন হতে খেয়ে আসতে পারেন। ম্যাপ লিংকঃ 
.
৩৩/ খাসেরচর বাজার : ৬০ কিমি : বাকি আটদশটা মফস্বলের মতই, ছোটখাটো ছায়াঢাকা রাস্তায় সাইক্লিং করে মজা পাবেন, শীতের সময়ে ভালো খেজুরের রসের সন্ধানও পেয়ে যাবেন। ম্যাপ লিংকঃ 
.
৩৪/ জল ও জঙ্গলের কাব্য : ৬০ কিমি : আরবানাইজেশনের যুগে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই প্লেসে গেলে চোখ জুড়িয়ে যাবে! অনেক সিন্সিয়ারলি প্লেসটির রক্ষণাবেক্ষণ কয়া হয় বলে প্রকৃতির রুপ যেন উপচে পড়ে। বর্ষাকালে গেলেই একমাত্র আসল রুপটা দেখা যায়। টঙ্গী স্টেশন রোড পুবাইল রোড টাও সুন্দর, এছাড়া গাজীপুর দিয়েও যাওয়া যায়। ম্যাপ লিংকঃ
.
৩৫/ রুপগঞ্জ : ৬০ কিমি : এটাই এক্স্যাক্ট কোনো প্লেস নয়। পুর্বাচল এক্সপ্রেস হাইওয়ে দিয়ে রাইডে যাওয়া খারাপ লাগবে না বা যাত্রাবাড়ি ডেমরা চনপাড়া হয়েও আসা যায়। এলাকার কপোতাক্ষ গ্রীন সিটি, জলসিরি আবাসন প্রকল্পে ঢু মেরে আসতে পারেন। বেরাইদ ঘাট থেকে নৌকা পার হয়েও গ্রাম্য এরিয়ায় সাইক্লিং করে যাওয়া যায়। ম্যাপ লিংকঃ
.
৩৬/ সোনারগাঁও : ৬৪ কিমি : আসল প্লেস অফ ইন্টারেস্ট জাদুঘর বা পানাম সিটি নয়, বরং এদের ঘিরে থাকা ছোট্ট রোড গুলো! মেইন রোডের ধরে দাড়িকান্দি যাওয়ার পর ছোট ছোট রোড ভেতরের এলাকাগুলোতে ঢুকে গেছে!! কোলাহলমুক্ত ছায়াঘেরা পরিষ্কার রোড গুলোতে সাইক্লিং করে মজা পাবেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
৩৭/ মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি : ৬৫ কিমি : রুপগঞ্জ দিয়ে এসে ঘাটে ফেরি পার হয় ডানের রোড ধরে এগোলেই জমিদার বাড়ি টি, যদিও এটা এখন মুড়াপাড়া সরকারি কলেজের একাডেমিক বিল্ডিং হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশাল মাঠে বসে কিছু সময় আড্ডা দিয়েও কাটিয়ে দেয়া যায়। ম্যাপ লিংকঃ 
.
৩৮/ টি এণ্ড টি কলোনি, জয়দেবপুর : ৬৬ কিমি : পরিষচ্ছন্ন এলাকাটির মূল আকর্ষন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউণ্ড কন্ট্রোল স্টেশন এখানেই অবস্থিত, বিল্ডিং এর সামনে দিয়ে ঘুরে আসতে পারবেন। সেই সাথে কলোনি এরিয়া ঘুরতে ভুলবেন না যেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
৩৯/ আড়িয়াল বিল : ৭০ কিমি : এত সব প্লেসের মধ্যে আমার সবচেয়ে পছন্দের প্লেস এটাই। ভরা বর্ষায় দুপাশে বিল পানিতে ভরে ওঠে, অনেক সময় রাস্তায়ও পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ডুবে যায়, তাছাড়া রাস্তার ধারে দুপাশে বড় বড় গাছ পুরো রাস্তাকে ছায়া ঘিরে রাখে, নির্মল বাতাসে রাইড করাটা অন্যরকম একটা অনুভুতি, বেশিরভাগ মানুষ মাওয়া রুটে শ্রীনগর দিয়ে আড়িয়াল বিলে আসে। কিন্তু রোহিতপুর দিয়ে বিলে আসার রাস্তা টা অনেক বেশি সুন্দর, কে জানে! এই রুটে মানুষ আসে না বলেই হয়তো এত সুন্দর আছে এখনো। ম্যাপ লিংকঃ 

৪০/ মায়াদ্বীপ, সোনারগাও : ৮০ কিমি : সোনারগাও যদি এসেই পড়েন তবে মায়াদ্বীপ ঘুরে আসতে বেশি সময় লাগে না, এর জন্য সোনারগাও হতে বৈদ্যের বাজার ঘাট বা আনন্দবাজার ঘাটে যেয়ে ট্রলারে করে মেঘনার বুকে ভাসতে হবে! দ্বীপের ধারে মানুষের আবাস খুব কম, খোলা মাঠে সারিতে সারিতে গরুর পাল দেখতে পারবেন, বিকেলে সুর্যাস্তটাও খারাপ লাগবে না দ্বীপ থেকে! ম্যাপ লিংকঃ
.
৪১/ ভাগ্যকুল,মুন্সীগঞ্জ: ৮২ কিমি : ঢাকার অলিতে গলিতে মিষ্টির দোকানে ভাগ্যকূল নামটা শুনেই থাকবেন, জ্বি এটা একটা রিয়েল প্লেস, মিষ্টি এবং সন্দেশের জন্য বিখ্যাত! তাছাড়া পদ্মা পাড়ের হোটেলগুলোতে ইলিশ ভাজার টেস্ট মাওয়া ঘাটের চেয়েও ভালো মনে হয়। লোকাল রুটে রাইড করে মাওয়া পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন, রিলাক্সিং রাইডের এক্সপেরিয়েন্স দেবে। ম্যাপ লিংকঃ
.
৪৪/ বাংলাদেশে ফিল্ম সিটি : ৮৫ কিমি : বেশ বড় একটি এরিয়া, মানুষজন কমই বলা যায়, স্থানীয় মানুষ গরু, ছাগল চড়িয়ে বেড়ায় আর চাষাবাদ করে থাকে। সুন্দর এরিয়া। তাছাড়া পাশেই রয়েছে বিশাল রেডিও সেন্টার, রিলাক্সিং প্লেস হিসেবে মন্দ নয়। ম্যাপ লিংকঃ
.
৪৩/ মাওয়া ঘাট : ৯০ কিমি : নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না, জাস্ট বলবো ছোট খাটো লোকাল রোড গুলো বিশেষ করে লৌহজং এরিয়া এক্সপ্লোর করলে কাঠের তৈরি দোতালা, তিনতলা মোবাইল বাড়ি দেখতে পারবেন! বর্ষার সময় এলাকা তলিয়ে যায়, সে কারণে সম্পুর্ণ বাড়িই তুলে ফেলে অন্য প্লেসে নিয়ে যাওয়ার মেকানিজম রয়েছে, সুযোগ থাকলে অপর পাড়ের পদ্মা এপ্রোচ হাইওয়ে অবশ্যই অবশ্যই ঘুরে আসবেন । ম্যাপ লিংকঃ
.
৪৪/ বেলাই বিল : ৯০ কিমি : জল ও জঙ্গলের কাব্য থেকে খুব কাছেই সুন্দর একটা বিল, অনেক রুটেই যাওয়া যায়, তবে রেললাইনের কোল ঘেষে যাওয়া এই রোড টাই বেশি সুন্দর! সারা বছরই পানি থাকে তবে বর্ষায় রূপ বেড়ে যায় বহুগুণে, কানাইয়া বাজারে যেয়ে নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করে বিল ঘুরতে পারবেন। নদীর পাশে শ্মশান ঘাট টি দেখে আসতে ভুলবেন না। ম্যাপ লিংকঃ
.
৪৫/ মকশ বিল, সফিপুর গাজীপুর : ৯৫ কিমি : অনেক বড় একটি বিল, এবং যাওয়ার জন্য রাস্তাটাও বেশ সুন্দর, আশেপাশের এরিয়াগুলোও বর্ষায় অনেক সুন্দর হয়ে ওঠে, পাকা রোডে রাইড করে মজা পাবেন বেশ। ম্যাপ লিংকঃ
.
৪৬/ মৈনট ঘাট : ১০০ কিমি : কক্সবাজার সৈকতের সাথে অনেকটা মিল থাকায় এর নামই হয়ে গেছে মিনি কক্সবাজার! বর্ষা মৌসুম এভোয়েড করে শীতে রাইড করলেই বুঝতে পারবেন নামের যথার্থতা! পথে বাশতলা বাজারের মিষ্টি খেয়ে আসবেন, নবাবগঞ্জের জমিদার বাড়ি ঘুরতে পারেন। সময় থাকলে পাশাপাশি বাহ্রা ঘাটও ঘুরে ফিরতে পারবেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
৪৭/ শতবর্ষী বটগাছ, ষাইট্টা, ধামরাই : ১০০ কিমি : নামেই বলে দিচ্ছে সব কিছু, বটগাছটির শাখা প্রশাখা ছড়িয়ে পড়ে ছায়া দিচ্ছে বিশাল একটি এরিয়া জুড়ে, হিস্টোরিক ভ্যালু হিসেবেই সাইক্লিস্টরা রাইড দিয়ে আসেন। ম্যাপ লিংকঃ
.
.
এখানে যতগুলো প্লেসের ডিরেকশন দেয়া আছে সবগুলোই আমার নিজের রাইড দেয়া এক্সপেরিয়েন্স থেকে বলা। সময়ের সাথে একটু হেরফের হতে পারে লোকেশনগুলোর। তাছাড়া ১০০ কিমি+ ডেস্টিনেশনগুলো আমি লিস্টে রাখিনি। ভূলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, যেকোনো ইনফো ভূল দেয়া থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানাবেন। ঢাকার আশেপাশে আরো কোনো প্লেস যদি থাকে যেখানে আপনার মনে হয় সকল রাইডারদের একবার হলেও রাইড দিয়ে আসা উচিত, অবশ্যই অবশ্যই কমেন্টে জানিয়ে যাবেন। আমি অলয়েজ নতুন নতুন প্লেসে রাইড দেয়ার জন্য মুখিয়ে থাকি!! 😁

সবশেষে,
I. যেকোনো রাইডের সময় সেফটি গিয়ার ইউজ করবেন
II. রাস্তায় বেখেয়ালে সাইকেল চালিয়ে অন্যান্য যানবাহন, মানুষদের বিপদে ফেলবেন না
III. যেখানে সেখানে প্লাস্টিকের বোতল, খাবার প্যাকেট ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না
IV. সকল প্লেসের প্রাইভেসিকে অবশ্যই সম্মান করবেন
#HappyCycling

©Tanviir Ahmed‎

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot