লেটেস্ট

Post Top Ad

Your Ad Spot

Friday, June 19, 2020

যেসকল কারণে কমদামী সাইকেল কিনবেন না

বিডিসাইক্লিস্ট গ্রুপ সহ সমমনা বেশ কিছু সাইক্লিং গ্রুপের কিছু সদস্য যারা সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন কিংবা অনেকদিন গ্রুপের সাথে থাকার পরে সাইকেল কেনার প্রতি আগ্রহ জন্মেছে তাদের মধ্যে প্রায় সবাই কম দামে সাইকেল কিনতে চান। তাদের সাইকেল বিষয়ে যথেষ্ট ধারণা না থাকার দরুন কিংবা বাজেট স্বল্পতার দরুন কম দামী সাইকেল কিনতে চান। তাদের আগ্রহকে আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। তবে এক্ষেত্রে তাদের কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে কম দামী সাইকেলে খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি। নিম্নমানের পার্টস সম্বলিত এসব সাইকেল কেনার কিছুদিন পর পরই আপনাকে বারবার ডাক্তারের কাছে দৌড়াতে হবে।

কমদামী সাইকেল মানেই যে একদম খারাপ ঠিক তা না। অনেকেই যথেষ্ট সন্তুষ্ট আছেন কমদামী সাইকেল নিয়েই। তবে বেশির ভাগ মানুষেরই অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি নিম্নমানের যন্ত্রাংশের জন্যে যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভালো মানের দামী বাইকগুলো অনেক বেশিই আরামদায়ক। মাঝে মাঝে যত্ন নিলে যেকোনো সময় আপনাকে সর্বোচ্চ ভালো অভিজ্ঞতা দিতে প্রস্তুত সেগুলো।

যাদের বাজেট নিয়ে সমস্যা তাদের কথা আলাদা, কিন্তু যারা ভাবছেন যে সাইকেলই তো ! এতো দাম দিয়ে কিনে কি হবে ! তাদের জন্যে একটাই কথা ! সাইকেলই তো ! এতো দাম দিয়ে অনেক কিছুই হবে ! কখনো সময় করে ভালো সাইকেলগুলোতে একটু বেড়িয়ে আসুন, মেকানিজম বোঝার চেষ্টা করুন। প্রেমে পড়ে যাবেন নিশ্চিত ! 😉 আপনি কিপ্টা হলে এই যুক্তি প্রযোজ্য নয়।


যেসকল কারণে কমদামী সাইকেল কিনবেন না:

যন্ত্রাংশ নিম্নমানের

অল্প দামের মধ্যেই এখন ডিস্ক ব্রেইক সহ, বেশ অনেকগুলো গিয়ারসহ, ডুয়াল সাসপেনসনসহ রংচঙা সাইকেল পাওয়া যায় বাজারে। যারা সাইকেল সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা রাখেন না তাদের কাছে এগুলো বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়। আর অনেকেই কমদামে এতোসব সুবিধা পাওয়ার দরুন দামী সাইকেল না কিনে এগুলো কেনার জন্যে উৎসাহী হয়।

প্রথম দেখায় তেমন কিছু বোঝা না গেলেও সাইকেল চালানো শুরু করার কিছুদিন পরেই সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে শুরু করে। যেখানে আর দশজন সাইকেল চালিয়ে দিব্যি কয়েকশো কিলোমিটার পাড়ি দিচ্ছে সেখানে মাত্র কয়েক কিলোমিটার চালিয়েই খুব বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন ! যন্ত্রাংশের নিম্নমানের কারণে আপনি যতটুকু বল প্রয়োগ করছেন তার সবটুকুই সাইকেল চলার জন্যে ব্যয় হতে পারছেনা। যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হবে আপনাকে। আজ এই সমস্যা তো কাল ঐ সমস্যা, আর একটার পর একটা সমস্যা লেগেই থাকবে। ডাক্তার দেখাতে দেখাতেই আপনার পকেট খালি হয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে।

যথেষ্ট খারাপ মানের টায়ার

কমদামী সাইকেলে ভালো মানের টায়ার আশা করাটা বোকামি। যেখানে মোটামোটি মানের এক জোড়া টায়ারের দামই প্রায় হাজার তিনেক এর কাছাকাছি সেখানে তার চেয়ে কিছু টাকা বেশি খরচ করলেই একটা সাইকেল হয়ে যাচ্ছে। তাই সেইসব সাইকেলের টায়ার নিম্নমানের হবে সেটাই স্বাভাবিক।

রাস্তায় চলার সময় অস্বাভাবিক রকম ঝাঁকি অনুভব করতে হবে। প্রথমে মনে হতে পারে, রাস্তার কারণে এমনটা হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অযাচিত ঝাঁকির পেছনে নিম্নমানের টায়ার দায়ী। আর কিছুদিন পর পর টিউব লিক হওয়া আর ফেটে যাওয়া তো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।

প্রচুর ভারী

কমদামী সাইকেলগুলো প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট ভারী হয়। তাই চালানোর সময় সাইকেল মেইনটেইন করা মোটেও কোন সুখকর অভিজ্ঞতা না। বেশি ওজনের কারণে এর জড়তাও বেশি তাই আপনাকে অপেক্ষাকৃত বেশি শক্তি প্রয়োগ করতে হবে ভারী সাইকেল চালানোর জন্যে।

বাজে সাসপেনশন

অনেকেরই কাছেই ডুয়াল সাসপেনশন ভালো লাগতে পারে। হয়তো ধারণা যে ডুয়াল সাসপেনশন এর কারণে ঝাঁকি এড়ানো যাবে। তবে দুঃখের বিষয় কমদামী সাইকেলের সাসপেনশন থাকা আর না থাকা প্রায় একই। ভোগান্তিতে ফেলবে আপনাকে, আর যদি ডুয়াল সাসপেনশন হয় তাহলে ডুয়াল ভোগান্তিতে পড়বেন 😉

স্যাডেল বা সিট পোস্টের নিম্নমান

দীর্ঘ-সময় সাইকেল চালানোর জন্যে স্যাডেল বা সিট পোস্ট ভালো মানের হওয়াটা আবশ্যক। খারাপ মানের সিট পোস্টে নিয়মিত লম্বা সময় সাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতা কখনোই আরামদায়ক না। পিছনের অংশে যথেষ্ট ব্যথা অনুভব করতে পারেন নিম্নমানের স্যাডল এর কারণে।

অস্বস্তিকর ব্রেইক সিস্টেম

কমদামী সাইকেলগুলো ব্যবহৃত ব্রেইক সিস্টেম যথেষ্ট নিম্নমানের। নানারকম দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন বাজে ব্রেইক সিস্টেমের কারণে। আর ইদানীং কম দামী সাইকেল গুলোতেও ডিস্ক ব্রেইক দেয়া হয়। নিম্নমানের স্টিল প্লেট দিয়ে তৈরি এই ডিস্ক ব্রেইকগুলোর উপর কখনোই আস্থা রাখা যায়না।

গিয়ার সিস্টেম

অল্প দাম দিয়ে কিনলে যেসব গিয়ারওয়ালা সাইকেল পাওয়া যায় সেগুলোর গিয়ার সিস্টেম মোটেও ভালো না। কোনটাই সঠিকভাবে গিয়ার শিফট করতে পারেনা। গিয়ার শিফট করার ব্যবস্থাও ভালোনা।

দেখতে অসুন্দর

যে সঙ্গীকে নিয়ে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াবেন তা যদি আকর্ষণীয় না হয় তাহলে কি আর চলে? 😉 যারা সৌখিন তাদের কাছে সৌন্দর্য অনেক বড় একটা বিষয়। কমদামী সাইকেলের চেয়ে হাজার গুণে বেশি সুন্দর দামী বাইকগুলো 😛

শেষ কথা

সময় কাটছিলো না, নিতান্তই সময় পার করার জন্যে যাচ্ছেতাই পোস্টটা লিখলাম। ইতোপূর্বে অনেকেরই কমদামী সাইকেল ব্যবহার অরে ভোগান্তিতে পড়ার অভিজ্ঞতা থাকতে পারে, কমেন্টে শেয়ার করলে খারাপ হয়না। কোনরকম ব্যবসায়িক প্রচারণার উদ্দেশ্য নিয়ে এই পোস্ট লেখা হয়নি। কারো যদি তেমন কিছু মনে হয়ে থাকে তাহলে সেটা নিতান্তই তার ব্যক্তিগত মতামত হিসেবে গণ্য করতে হবে।  🙂

©Ariful Islam Palash

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot