লেটেস্ট

Post Top Ad

Your Ad Spot

Thursday, June 11, 2020

নিরাপদে সাইকেল কমিউটিং টিপস

বিশ্বজুড়েই বিদ্যমান করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতিতে অফিস বা জরুরি প্রয়োজনে বাড়ছে সাইক্লিং। আমাদের দেশও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে বাইসাইকেল কমিউটারের সংখ্যা। অনেকেই প্রথম বারের মত সাইকেল নিয়ে রাস্তায় নামছেন কমিউট করতে। আবার অনেকে নামছেন বহু বছরের গ্যাপের পরে। ফলস্বরূপ প্রধান সড়কে সাইক্লিং করা নিয়ে অনেকেই আছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। তাই সকলের সুবিধার্থে বিডিসাইক্লিস্টসের পক্ষ থেকে নিরাপদ বাইসাইকেল কমিউটিংয়ের জন্য কিছু টিপস বা গাইডলাইন নিয়ে আলোচনা করা হলো-


১/ আমরা যারা অনেকদিন পর সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করার প্ল্যান করছি আমাদের উচিত শুরুতেই বড় রাস্তায় না উঠে গলির ভেতর বা খালি রাস্তায় চালিয়ে ব্যালেন্সটা একটু ঝালিয়ে নেয়া। এরপরে রাস্তায় চালানোর সময় সতর্ক থাকুন। অন্য যানবাহনের প্রতি খেয়াল রাখুন। কখনোই অনুমান করবেন না অন্য চালকরা নিয়ম মেনে চালাবে। অনুমান করার চেষ্টা করুন অন্যরা কি অস্বাভাবিক কাজ করতে পারে। যদি কেউ তা করে ফেলে আপনি কিভাবে নিজেকে বাঁচাবেন আগেই ভেবে রাখুন। রাস্তার মাঝে বাস থেমে যাত্রী নামানো শুরু করতে পারে, অথবা পথচারী ঠিক আপনার সামনে দিয়ে দৌঁড়ে রাস্তা পার হবার সিদ্ধান্ত নিতে পারে বা রিক্সাওয়ালা/সিএনজিওয়ালা ভেবে বসতে পারে বাম দিক থেকে এসে আপনার সামনেই সে ডানে মোড় নেবে। কোন সম্ভাবনাকেই উড়িয়ে দিবেন না। এমনকি থেমে থাকা গাড়ির দরজা হটাত খুলে যাওয়াও বিপদের কারন হতে পারে।

২/ রাস্তায় আমাদের সবসময় বামের লেনে থাকা উচিত। কখনো লেন চেঞ্জ করতে হলে পেছনে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নেয়া আবশ্যক। কখনোই পেছনে না দেখে লেন চেঞ্জ করা যাবে না। সম্পূর্ণ মনোযোগ রাস্তা এবং ট্রাফিকের প্রতি রাখুন। ব্যস্ত রাস্তায় সাইকেল চালানোর সময় ফোনে কথা বলা, সেলফি তোলা, ধূমপান করা ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকুন। ফোনে কথা বলতে হলে রাস্তার এক পাশে নিরাপদ জায়গায় সাইকেল থামিয়ে কথা বলুন।


৩/ কমিউট করার সময় তাড়াহুড়া করা যাবেই না। ধীরে এবং ঠান্ডা মাথায় চলতে হবে। কনফিডেন্স কম থাকলে রিস্ক না নিয়ে একটা রিক্সার পেছন পেছন চালিয়েও কিন্তু গন্তব্যে সহজেই পৌছানো যায়।


৪/ বড় রাস্তায় মোড় ঘোরা একটু কঠিন কারন অনেক গাড়ি থাকে। মোড় পার হবার সময় অন্য চালকদের সাথে দৃষ্টি সংযোগ স্থাপন করুন। আপনি কি করতে যাচ্ছেন তা অন্য চালকদের বুঝতে দিন। তারা কি করবে আপনি বোঝার চেষ্টা করুন। মনে করেন আপনি ডানে মোড় নিবেন। আপনি যদি কোন গাড়ীর বামে থাকেন তাইলে কিন্তু আপনার কষ্ট কমে যাচ্ছে। আপনাকে অন্যান্য গাড়ি থেকে কিন্তু ওই গাড়ীটা আড়াল করে রাখছে। এছাড়া হাত দিয়ে ইশারায় অন্য গাড়িদের সংকেত দিয়ে আপনার পরবর্তী গতিবিধি সম্পর্কে অন্যদের অবহিত করুন।


৫/ মুখ দিয়ে চিৎকার করে আশে পাশের মানুষ বা গাড়িকে সিগন্যাল দিন। সাইকেলের বেল বড় রাস্তায় খুব একটা শোনা যায় না। আপনি হাত ব্যবহার করেও সিগন্যাল দিতে পারেন। মনে রাখবেন আপনি যত জোরেই সাইকেল চালান না কেন যন্ত্রচালিত যানবাহনের তুলনায় আপনার গতি ধীর। খেয়াল রাখুন আপনার ধীর গতির জন্য পেছনের যানবাহনকে যেন গতি কমাতে না হয়। প্রয়োজনে রাস্তার বামে চেপে এসে পেছনের দ্রুত গাড়িকে যাবার সুযোগ করে দিন। ওভারটেক করার সময় অবশ্যই পেছনে খেয়াল করুন আপনার ওভারটেকিং এর জন্য পেছনের কাউকে ব্রেক চাপতে হয় কিনা। সেরকম পরিস্থিতি হলে ওভারটেক করা থেকে বিরত থাকুন। স্মরণ রাখুন, আপনার জন্য পেছনের চালককে গতি কমাতে হলে কোন না কোন সময় সে ভুল করবেই। তখন আপনার পরিণতি কি হতে পারে তা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিন। ডানে/বামে মোড় নেবার সময় যথেষ্ট আগে থেকে হাত দিয়ে সংকেত দিন। সংকেত আর উজ্জ্বল পোশাকের মাধ্যমে অন্য চালকদের কাছে নিজেকে দৃশ্যমান রাখুন। এমন পরিস্থিতি কখনোই সৃষ্টি করবেন না যেখানে অন্য চালকরা আপনাকে দেখতে না পায়।


৬/ রাস্তায় সোজাভাবে সাইকেল চালানোর ট্রাই করবেন, আঁকাবাঁকাভাবে চালিয়ে বিপদ ডেকে আনবেন নাহ। গতি নিয়ন্ত্রণে রাখুন। আপনি যত দক্ষ চালকই হোন না কেন, গতি যত বেশী হবে, প্রয়োজনে থামতে তত বেশী সময় লাগবে। থামতে সময় যত বেশী লাগবে, দূর্ঘটনার সম্ভাবনা তত বাড়বে।


৭/ কখনোই ভুলবেন না রাস্তায় অন্য সবার চাইতে আপনি সবচেয়ে নাজুক। যেকোন দুর্ঘটনায়, তা যার দোষেই হোক, আপনার ক্ষতি হবার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশী।


৮/ সাইকেল পার্কিং এর ব্যাপারে সচেতন হন এবং ভালোমানের লক কিনুন। যথাসম্ভব নিরাপদ স্থানে সাইকেল পার্কিং এর ব্যবস্থা করুন। বাজারে সস্তা মানের অনেক লক পাওয়া যায়। সেগুলো পরিহার করে ভালো মানের লক ব্যবহার করুন।


৯/ হেলমেট ছাড়া কখনোই রাস্তায় বের হবেন না। গ্লাভস হাইলি রেকোমেন্ডেড।


১০/ অফিসে যাতায়াতের জন্য একটা পাতলা গেঞ্জি পড়ে অফিসে গিয়ে চেঞ্জ করতে পারেন। এতে অফিসের জামা ঘামে নষ্ট হবে না। এছাড়া চাইলে অফিসে এক সেট অতিরিক্ত পোশাক রাখতে পারেন।


১১/ অতিরিক্ত সাইক্লিং, অধিক গরম ও আদ্র পরিবেশের কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই পানিশূন্যতা রোধে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। বেশী ঘাম হলে পরিমাণমত স্যালাইন বা গ্লুকোজ জাতীয় পানীয় পান করতে পারেন।


১২/ দূরত্ব বেশী হলে এবং নিয়মিত সাইক্লিং এ অনভ্যস্ত হলে প্রয়োজন অনুসারে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর বিশ্রাম নিতে পারেন।


এখানে দেওয়া টিপ্সগুলো মেনে চললে আশা করা যায় সাইকেলে কমিউট আপনার জন্য হয়ে উঠবে নিরাপদ ও আনন্দদায়ক।
ধন্যবাদ

©TAHMIDUL KABIR TNMOY

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot