লেটেস্ট

Post Top Ad

Your Ad Spot

Tuesday, November 3, 2020

কীভাবে শিখলাম?

 চলুন সবাই পুরাতন গল্পগুলোকে নতুন রূপে সাজাই।

#কীভাবে_শিখলাম হ্যাসট্যাগ ব্যবহার করে আপনিও আপনার গল্পকে ছড়িয়ে দিন হাজারো কিশোর-কিশোরী তরুণ-তরুণীর মধ্যে। আর অনুপ্রাণিত করুন হাজারো মানুষকে দুই চাক্কার প্যডেলে।

আমি একজন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। সেই ক্লাস থ্রিতে আম্মুর কাছে বায়না ধরেছিলাম সাইকেল কিনে দেয়ার। তখন গ্রামে আম্মুর সাথেই ছিলাম আর আব্বু ঢাকায় থাকত। তো আম্মুকে বলার পর আম্মু বলল যে আগে সাইকেল শিখ তারপর কিনে দিব। একজন পরিচিত ভাইকেও ঠিক করে দিলেন শিখানোর জন্য। আম্মু ওই মোস্তফা ভাইকে বলেছিলেন ১০০টাকা দিবেন যদি আমাকে সাইকেল শিখিয়ে দেয়। যখনকার সময়ে লাল প্যকেটে মোড়ানো গ্লুকোজ বিস্কুটই ছিল সকালের নাস্তা তখনকার সময়ে ১০০টাকার ভালই মূল্য ছিল। তো ১-২ দিন শিখানোর পর তৃতীয় দিনে আম্মু আসল দেখতে কতটুকু শিখছি। তো ওই ভাইয়ের একটা পদ্ধতি ছিল যে সে আমাকে সাইকেলে বসিয়ে অনেকক্ষণ স্পিড দেয়ার পর ছেড়ে দিত, এতে করে সাইকেল কিছুটা নিজে নিজে চলত আর আমাকে প্যডেল দিতে বলত। আর আম্মুকে দেখাইতো বলতো যে মামি দেখেন মাছুম শিখে গেছে। তো ছোট জায়গায় শিখছিলাম তো বার বার গোলচক্কর দিতে হইতো। স্পিড আস্তে আস্তে কমে আসার ফলে আর আমার প্যডেল কম দেয়ার ফলে এবার বাক নিতে গিয়ে পড়ে গেছি আর আম্মুতো সামনেই দাড়ায়ে। তারপর ওই ভাইয়রে আম্মু ধমক টমক দিয়ে বলে তুই আমার ছেলেরে ফালাইয়া দিচছ তোরে কোন টাকা দিমুনা। এরপর গ্রামের মার্কেটে সাইকেল ভাড়া পাওয়া যাইত। মোস্তফা না খেইলা ওই সাইকেলগুলা কয়েকদিন ভাড়ায় চালাই ছিলাম। তবে ওই সাইকেলগুলা খুব একটা ভালো ছিল না তার মধ্যে আমি চালানোর সময় কোন প্রবলেম হইলে সেটা আবার জরিমানা দিতে হবে। জীবনের বেশিরভাগ সময় যেখানেই গেছি একা গেছি তো পারলে একাই পারছি না পারলে ছাইড়া দিয়া আসছি। তো ওই সাইকেলগুলো এই কারণে ১/২দিনের বেশি চালানো হয় নি। তাছাড়া স্কুলে যাওয়ার সময় টাকাও দেয় না কখোনো দিলেও সর্বোচ্চ ৫টাকা। সামনে এক নানার বাকির দোকান ছিল মাসশেষে আব্বু টাকা পাঠাইলে পরিশোধ করে দিত। তো স্কুলে যাওয়ার সময় কিছু কিনে দিতে হইলে সেখান থেকেই কিনে দিত। এরপর ক্লাস ফাইভে ঢাকায় চলে আসি পড়ালেখার জন্য। আবাসিক এলাকায় অনেককেই সাইকেল চালাতে দেখতাম কিন্তু কখনো সুযোগ হয় নি। কারণ আব্বুসহ ম্যসে থাকতাম তো কখনো একা বের হতাম না। ফলে কোন বন্ধুও হয় নি। প্রতি দুই ঈদের যেকোন একটা ঈদে বাড়ি যাওয়া হোত। বাড়িতে গেলে বাড়ির কয়েকজনের বিদেশী সাইকেল ছিল। সেখানকার মধ্যে কাছের এক মামতো ভাইয়ের সাইকেলটা অনেকটা মেয়েদের মত ছিল। হ্যন্ডেলবারগুলো বাংলা সাইকেলের মত নোয়ানো আর সেই সাইকেল গুলো বিশেষত্ব ছিল যে সেগুলোতে একটা লাইট ছিল যেটা অনেক স্পিডে চালালে জ্বলত। কিন্তু ফ্রেম তো অনেক বড় ছিল দেখেই ভয় লাগত। একে তো পারিনা আবার যদি পড়ে গিয়ে কোন সমস্যা হয় সাইকেলে তাইলেতো গেছি আমি। ওর সাইকেল নিয়া বেশ কতদূর চালাইলাম শিখাতেছি। এরপর মধ্যে ওর মা বাড়িতে চিল্লাচিল্লি লাগাই দিছে যে সাইকেল নিয়া কই গেছি আমি। আমার ফোন নাম্বার তো ওর আম্মার কাছে নাই দিছে আমার কাকারে ফোন আর আমার কাকা আমারে ফোন দিয়া বলে তুই তাড়াতাড়ি যাইয়া ওর সাইকেল দিয়া আয়। এরপর দিয়া গেলাম সাইকেল। বিদেশি জিনিসতো একটু দরদ বেশি তারমধ্যে গ্রামের কিছু মানুষ আছে যারা এমন হয়। এরপর আর কোনদিন ওর সাইকেল চালানো হয় নাই। এরপর ঢাকায় চলে আসলাম। ঢাকায় কোচিং ১০.৩০এ ছুটি হওয়ার পর স্কুলে যাওয়ার আগে ১ঘণ্টা সময় পাওয়া যাইত। যেহেতু স্কুল ড্রেসেই কোচিংএ আসতাম তাই এই ১ঘণ্টা কোচিংএ কাটাতাম নাইতো পাশেই এক মামার বাসা ছিল সেখানে যেতাম। সেখানে গিয়ে দেখি মামার দুইটা সাইকেল একটা বাংলা সাইকেল আরেকটা ছোট সাইজের ভাংগারী সাইকেল। পরে মামার এই সাইকেল নিয়ে আমার দুই বন্ধু আমাকে সাইকেল শিখাতে নিয়ে যায়। তারা কত যে চেষ্টা করল শিখানোর। কখনো আমার কোমর নড়ে ঠিক হয় না, কখনো বা ইট পিছনের সিটে বেঁধে দিয়েও চেষ্টা করল কিন্তু পারলাম না। ঢাকায় আর কখনো সাইকেল স্পর্শ করা হয় নি। আবার কোন এক ঈদে বাড়িতে গেলাম। সেবার খুব কাছের এক ছোট ভাইয়ের কাছে নতুন বিদেশি সাইকেল আসল যেটা সিট অনেক উচুঁ করা যায় আর হ্যন্ডেলও অনেক উচুঁ করা যায়। ওরে বলার পর বাড়ির একটু দূরে নিয়া আইসা দিল যাতে কেউ দেখতে না পায়। ওর সাইকেল পেয়ে আমার মনে কনফিডেন্স চলে আসল যে আমি পারব কারণ এটাতে আমার পড়ার কোন সুযোগ ছিল না। যেই ভাবা সেই কাজ এই সাইকেলেই আমার প্রথম শিখা। আর নিজেরটা নিজেই শিখেছি কারো সাহায্য ছাড়া। আর যেদিন শিখেছি সেদিনেই সাইকেল নিয়ে চলে গেছি চিটাগং হাইওয়েতে চৌদ্দগ্রামে। আবারও গ্রাম থেকে ঢাকায় চলে আসি। এরমধ্যে বাসায় এক দুবার বলেছিলাম সাইকেল কনে দেয়ার কথা। কিন্তু আমার সাইকেলের চেয়ে কম্পিউটার/মোবাইল উপর বেশি আকর্ষণ ছিল বিধায় সাইকেল আর কিনে উঠা হয় নি। এভাবেই দিন চলতে থাকলে সাইকেল/কম্পিউটার/মোবাইল কিছুই না পেয়ে। এরমধ্যে বন্ধুদের সাইকেল এক দুই দিন চালিয়েছি। একবার হঠাৎ দুইটা সাইকেল ম্যনেজ করে এক গ্রামের বন্ধুর সাথে মিরপুর থেকে উত্তরা পর্যন্ত গিয়েছি, দিয়াবাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু এতটুকু আসতেই দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল আবার ভিতরের রাস্তা ভাংগা + এতটুকু রাস্তা আবার ব্যক করতে হবে। এসব চিন্তা করতে করতে এক সময় রাস্তায় বসে পড়লাম রেস্ট নিতে। এরপর আবার ফিরে আসলাম। আমি আব্বুর সাথে সকালে বাসায় বাসায় পেপার দিতাম, আমাদের পেপার ব্যবসা ছিল। আব্বুর বড় দুইটা সাইকেল ছিল বাংলা সাইকেল। একটা বাসার নিচ থেকেই চুরি হয়, আরেকটা এখনও আছে। এভাবেই রমজান মাস আসল কিন্তু যে কয়েকটা ছ্যারা/পোলাপাইন পেপার দিত আব্বুর আন্ডারে তারা হঠাৎ করে উদাও। রোজার মাসে পেপার দেয়া অনেক কষ্ট তাই হয়তোবা কাজ ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু আমার আর আব্বুর পক্ষেও তো বাড়তি দুইজনের কাজ করা কষ্ট ও সময়সাপেক্ষ ব্যপার। তাই আব্বু আমাকে বলল কিরে তুই না সাইকেল চালাইতে পারছ? সাইকেল কিন্না দিলে পেপার দিতে পারবিনা? আমি তো এক পায়ে খাড়া। হুম পারমু। এক দুই দিন পর গেলাম সাইকেল কিনতে, জানতাম আব্বুর বাজেট কম হবে আমার একটা টিউশন হতে ২হাজার টাকা পেতাম সেই দু হাজার টাকা সাথে নিয়ে এসেছি। দোকানে গিয়ে আমারতো চোখ গিয়ার সাইকেলের দিকে। আব্বুকে কয়েকটা দেখাইলাম বলল এইগুলা দিয়ে পেপার দিতে পারবিনা নিচে রাইখা গেলেই চুরি হইয়া যাইব। কথা সত্য। আব্বুর নজর বাংলা সাইকেলের এক সাইজ ছোট লাল কালারের একটা সাইকেলের দিকে। আমার তো ওই সাইকেল কোন ভাবেই ভাল লাগতেছেনা। আমি তরুণ একটা পোলা এই বুইড়াগো সাইকেল কিনুম। তারপর একটা সাইকেল আমি বের করলাম আব্বুরে দেখাইলাম কইলাম দেখো এটার দাম কম আছে ৭ হাজার টাকা। আব্বু কয় আমার বাজেট তো ৫ হাজার টাকা। আমি বললাম থাক বাকিটা আমি দিমু। সাইকেলটা ছিল ফুল গেয়ার সাইকেলের মত তবে সিংগেল স্পিড নাম Boxer, ডিস্ক ব্রেক, সাসপেনশন। সাথে একটা কুরিয়ার লাগয়ে নিয়ে নিলাম সাইকেলেটায়। সেখান থেকেই নিজের সাইকেলে নতুন জীবন শুরু। এরপর দুই হাঁটুই চিলল অনেক ছোট খাট অ্যক্সিডেন্ট করছি আর অনেক অনেক কিছু শিখছি আলহামদুলিল্লাহ। নিজের সাইকেল হওয়ার পর থেকেই সাইকেল আমি সবসময় রাফ চালাই। এভাবে রাফ চালানো কারণে আমার হেডসেট দুইদিন পরপর ভাংগতো আর কাছের দোকান থেকে লাগাইতাম দেখেন কমদামী জিনিসই পাইতাম। যদিও বেশি দামীটা আমি নিজেই লাগাতে চাইতাম না। এখন এটা ভাংগার কারণটা আমি বলি আপনি যখন পিছনে ভার নিয়ে খুব স্পিডে বাঁক নিবেন বা মোড় ঘুরবেন তখন আপনার হেডসেটে প্রেসার পরে। আরেকটা প্রবলেম হত সেটা হলো চেইন পড়ে যাওয়া। কতবার যে পড়ল তার ঠিক নেই। ঠিকও করাইতাম রিকশাওয়ালাদের কাছে টাকা কমের জন্য, আসলেই টাকাপয়সা ছিলই কম। আর সাইকেলের দোকানদাররা যেই রকম ডাকাইত তাতে মধ্যবিত্তে সাইকেল চালিয়ে খরচ পোষানোটা কঠিন হয়ে পরে। তাও আবার যদি বাসায় যদি বলি যে সাইকেলের ওইটা হইছে সাইকেলের তাইলেতো গেছি। নিজেরটা নিজেরই ঠিক করতে হইত। এই চেইন পড়া থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য একবার নতুন চেইনও লাগাই ছিলাম কিন্তু যে স্পিডে আমি চালাইতেছিলাম তাতে করে চেইনই ছিড়ে গেছে। ভাগ্য ভাল যে বেশি দূর যাই নি। কারণ সাইকেল রিকশায় করে নিয়ে আসার মত টাকাও ছিল না/নিয়ে বের হই নাই। সাইকেল নিয়ে বের হলে সর্ব্বোচ্চ একটা লিক + পাম দেয়ার টাকা নিয়ে বের হতাম। এরবেশি কখনো টাকাও ছিল না। আর এই টাকাটা পেতাম সকালে পেপার দিতে দিতে কিছু এক্সট্রা বিক্রি হলে তা আব্বুকেউও দিতাম না। আব্বু কিছু বলতও না। অ্যক্সিডেন্টের যদি কথা বলি তাহলে মনে আছে এইরকম দুইটা অ্যাক্সিডেন্ট হল:

১. একবার গ্রিন ইউনিভার্সিটির সামনে দিয়ে চালাচ্ছিলাম তখন রাস্তার কাজ করতেছিল। দুইপাশ দিয়ে পিচ রাস্তা, মাঝখানে কাটছিল সেখানে এখন ছোট ছোট ইটের কণা দিয়ে ভরাট করা হইছে। আমি এখন ডান সাইডে কারণ আমি যেই স্পিড মেইন্টেইন করি সেটা বাম পাশের রিকশাগুলো সাথে মিলে না বিরক্ত লাগে, তাই আমি বাসের পিছনে চালাচ্ছি । বাসের পিছনে চালাতে আমার তেমন কোন প্রবলেম হয় না। বাস যখন ব্রেক করে তখন আমিও ব্রেক করি কিন্তু প্রবলেম হল বাস যখন অ্যাক্সেলেরেট/স্পিড আপ করে তখন আমার পক্ষে পেডেল দিয়ে ততটুক স্পিড আপ করা সম্ভব হয় না। ফলাফল পিছনের প্রাইভেট কার আমাকে হর্ণ দেয়। বুজলাম এই লেনে আর চালানো যাবে না। তাই বাম লেনে আসব। আমার স্পিড অনেক ছিল সেই অবস্থায় আমি বামে মোড় নিয়ে নিছি, ওই যে রাস্তায় যে ইটের টুকরা দেয়া, মনে আছে? আমি আর ব্রেক ধরে স্পিডও কমাই নি ফলে এই স্পিডে হ্যন্ডেল ব্যলেন্স না থাকায় পল্টি খাই। আল্লাহ বাচাইছে একটা গাড়ির সামনে একটুর জন্য পড়ি না।

২. আরেকবার হইছে কী আমি এক গলি থেকে খুব ভোরে পেপার নিয়ে বেরোচ্ছি। আমিতো সবসময় গলি থেকে বের হয়ার সময় বেল দেই আজকেও দিলাম কিন্তু কোন রিটার্ন বেল পেলাম না ভাবলাম রাস্তা খালি তো আমি আমার মতোই মোটামোটি স্পিডে গেলাম। বাহির হইতেই দেখি সাঁই কইরা একটা ভ্যানগাড়ি আমার সামনে দিয়া গেলোগা। সকালে যেসব ভ্যানগুলা মাল নিয়া আসে সেগুলা এইরকম গরুর মত টানে। আমি কোনমত ওই ভ্যানকে পার করলাম পার করেই আমি নিজেকে নায়ক ভেবে এক হাত ছেড়ে সাইকেল চালানো শুরু করলাম, পিছনে পেপার বাঁধা ছিল ১০০এর মত। এক হাতে নায়কের মত চালানোর+বিবি সেটা ভাংগা থাকার কারণে ব্যলেন্স হারিয়ে সেদিন পড়ে গিয়ে ভালোই ব্যথা পেলাম।

এর মধ্যে একটা ভালো সাইকেলের খুব আকাংখা তৈরী হল। তো একবারে তো আর এত দামি সাইকেল কেনা সম্ভব না। তাই ভাবলাম একটা ফ্রেম কিনে সেটা আস্তে আস্তে সেটা বিল্ড করব। যে ভাবা সেই কাজ একটা ফ্রেম নিয়ে নিলাম Veloce 601 ২৭০০টাকা দিয়ে। দুই বন্ধু খুঁজে কিছু ছোট ছোট দাগ ছাড়া কিছু পেলাম না। যাক খুশি হয়েই নিয়ে নিলাম। তারপর ভাবলাম আমার বক্সারের যা যা আছে সব এটাই ফিট করি। ৪০০টাকা দিয়ে সব চেঞ্জ করালাম কিন্তু সিটপোস্ট এর ডায়ামিটার বেশি হওয়ার কারণে নতুন ফ্রেমে ঢুকছে না। তখন খেয়াল করলাম যে সিট পোস্ট যেখানে বসায় সেখানে ফাটল। হয়তোবা কোন ওভারওয়েট মানুষের দ্বারা এটা হইছে। এতক্ষনে বুজতে পারলাম ফ্রেমের ডিফেক্ট কই ছিল। মনটা খারাপ হয়ে গেল। যে ফ্রেমটাকে সঙ্গী বানিয়ে নেয়ার চিন্তা করছিলাম সেটায় সমস্যা, মন মানছে না। এর মধ্যে আবার আগের বক্সারের যে চেইন ছিল সেটা নতুন ফ্রেমে হচ্ছে না+ ডেরা লাগবে এত টাকা এখন নেই + সিট নেই। একদিন শুধু হাটাইয়া হাটাইয়া পেপার দিছিলাম আব্বু কিছু বলে নাই। পরের দিন শক্রবার সেদিন তো সেন্টারে গিয়ে পেপার নিয়ে আসতে হবে তাহলে এখন কি করব। বৃহস্পতিবার রাতেই আম্মুর কাছ থেকে ধার করে আবার ৪০০টাকা দিয়ে ফুল সাইকেল বক্সারে রিপ্লেস করি। এরপর ফ্রেমটা সেল দিয়ে দেই ৫০০টাকা লস করে।

চেইন পড়া, বিবি সেট ভাংগা, দুইদিন পর পর হাওয়া দেয়া সব মিলিয়ে যে কাজের জন্য কিনে ছিলাম সে পেপার দেয়ার কাজেই ঠিকমত হচ্ছে না। আবার ঘুরাফিরার জন্য সাইকেল ঠিক ঠাক করলেও পরে আবার দু-তিন দিন পেপার টানার পর একই হয়ে যায় সাইকেল। এই সাইকেল নিয়ে অনেকগুলা বিডিসাইক্লিস্ট এর ফ্রাইডে রাইডে জয়েন দেয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আবশ্যকীয় হেলমেট আর সকালে কাজ করার কারণে আর রাইড দেয়া হয় নি কখনো। আমি হেলমেট কিনি নি কারণ হেলমেটের প্রয়োজন বোধ করিনি। সাইকেল দিয়ে কাছে কাছেই যেতাম। তবে হ্যন্ড গ্লাভস সাইকেল কেনার আগে থেকেই কিনে রেখেছিলাম প্রো-বাইকারের। সাইকেলের সমস্যার কারণে বক্সারকে সেল দিয়ে দিলাম। যে কিনতে আসল সে বলল ভাই আপনার তো পিছনের চাক্কা টাল। টাল শব্দটা সেদিনেই আমি প্রথম শুনি। অথচ মিকারেরা কেউ আমার টালটা সারাইয়া দিল না/বলল না/বুজতে পারেনি। যাই হোক সেই সাইকেল সেল দিয়ে দিলাম। এরপর অনেক চিন্তা ভাবনা করে ভাবলাম Hero Ranger Max নিব। অনেক খোঁজ খবর নিয়ে জানলাম যে চেইন পড়ে না + স্পিডও ভালো আছে। নিয়ে নিলাম 2nd হ্যান্ড এক ভাইয়ের কাছ থেকে। নেয়ার সময় চেক করে দেখলাম ব্রেকসেট বলে কিছু নাই সব ক্ষয় করে ফেলেছে। তবে যেটা বুজতে পারি নি সেটা হল এটার মাঝখানের রডটা বাংগা ছিল। সাসপেনশন নেই তো তাই রাফ চালানোর কারণে এই রকমটা হয়েছিল। আমি আর আমার বন্ধু এটা বাংগবে কল্পনাও করি নাই। তবে চালানোর সময় আমি ফিল করছিলাম। পরে মেকার দেখানোর পর বলল জ্বালাই দিতে হবে। দিলাম আর সাথে নতুন ব্রেকসেট লাগালাম আর ফুল সার্ভিসিং করালাম। এরপর থেকে কখনোই এই সাইকেল আমাকে হতাশ করে নি। তবে একটু প্রবলেম না বললেই নয় সেটা হল ডিস্ক ব্রেক থেকে ভি ব্রেকে আসা এবং সাসপেনশন না থাকা আমার জন্য অনেক বড় অসুবিধা হয়ে পড়ে। যার ফলে আমার রাইডিং লিমিটেড হয়ে পড়ে। আর ভি ব্রেক দুই দিন পর পর ডেড। এই সাইকেল কত যে ব্রেক ছাড়া চালাইছি তার হিসাব নাই। লাস্ট ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় রাইডে গিয়েছিলাম সেই বন্ধুসহ। কারণ সেই রাইডে কোন বাধ্যবাধকতা ছিল। অনেক উপভোগ করেছিলাম বিজয় রাইড। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত আর ভোরে পেপার দেয়া হয় নি। পেপার দেয়ার জন্য আর সাইকেল বের করা হয় নি। এরপর বন্ধুদের সাথে ছোটখাট রাইড দিয়েছি কয়েকবার। এবার যেহেতু আর পেপার দিচ্ছি না তাই এটাকেও সেল দিয়ে নতুন রাইড দেয়ার মত একটা ভাল সাইকেল নিতে চাচ্ছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে অবশেষে আমার সে সুযোগ হল। সবার দোয়া আর ভালোবাসায় আমি নতুন একটি সাইকেল কিনার সামর্থ্য অর্জন করলাম। তাও সম্পূর্ণ নিজের টাকায়। তো রেঞ্জার ম্যক্স সেল করে দিলাম। বিক্রয়.কমে অ্যড দিয়ে ৩০মিনিটও রাখতে পারি নি মানুষ ফোন দিতে দিতে পাগল বানাইয়া ফেলতেছে। বুজায় গেছে করোনকালীন সাইকেলের কি চাহিদা। বেচে দিলাম এক ভাইয়ের কাছে। খুশি মনেই নিয়ে নিল। তারপর আমার সাইকেল কিনার পালা। অনেক খোঁজা খোঁজি করলাম। একটা সারাসেন নেয়ার খুব ইচ্ছা ছিল কিন্তু কেউ সেল দিচ্ছিল না সে সময়। নতুন নেয়া আরো পসিবল না কারণ করোনার জন্য দাম আরো বাড়াইয়া দিছে। তো অবশেষে আমার ভাগ্য গিয়ে ঠেকল কোরে। আলাহামদুলিল্লাহ নিয়ে নিলাম কোর প্রজেক্ট ১.৫। সাইকেল নেয়ার সময় এক ভাইয়ের অমায়িক ব্যবহার ভুলার মত না। SDCএর তন্ময় ভাই। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই। একটা কথা না বললেই নয় এবার কিন্তু সাইকেল কেনার আগেই হেলমেট কিনেছি। কারণ আমি জানি যে আজকে হোক কালকে আমি সাইকেল কিনবোই। নতুন জার্নি শুরু পরিকল্পনাতো অনেক দূর যাওয়ার বাকিটা আল্লাহর হাতে।

যারা আমার মত সেইম সিচুয়েশনে আছেন তাদের প্রতি আমার উপদেশ হবে নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন আর ধৈর্য ধরুন। বিশ্বাস আর ইচ্ছা থাকলে একদিন হবেই। বিশ্বাস রেখে বুকের ভিতর প্রত্যয় অনুভবে স্বপ্ন জয়ের যুদ্ধে এবার তুমিই জয়ী হবে।

সবাই আমার জন্য দোয়া রাখবেন। আল্লাহ হাফেজ।

©Abrarul Alam Masum

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot